কোরবানির ইতিহাস ও কোরআনের শিক্ষা:
ইতিহাস:
কোরবানির ইতিহাস অত্যন্ত প্রাচীন। হজরত আদম (আ.) ও তাঁর দুই ছেলে হাবিল ও কাবিলের ঘটনাই এর সূচনা। আল্লাহ্ তা’আলা তাদেরকে নিজেদের কোরবানি পেশ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন। হাবিলের কোরবানি গ্রহণ করা হলেও কাবিলের কোরবানি প্রত্যাখ্যান করা হয়।
পরে হজরত ইবরাহিম (আ.)-কেও তাঁর পুত্র ইসমাঈল (আ.)-কে কোরবানি দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি স্বপ্নে নির্দেশ পেয়ে পুত্রকে কোরবানি দিতে প্রস্তুত হন। কিন্তু যখন ছুরি চালাতে যাবেন, তখন আল্লাহ্ তা’আলা তাঁকে একটি কোরবানির পশু দিয়ে ইসমাঈল (আ.)-কে রক্ষা করেন।
এই ঘটনার স্মরণে প্রতি বছর মুসলমানরা ঈদুল আযহা উপলক্ষে কোরবানি করেন।
কোরআনের শিক্ষা:
কোরআনে কোরবানির গুরুত্ব ও তাৎপর্য ব্যাখ্যা করা হয়েছে।
- আল্লাহ্-এর প্রতি আত্মসমর্পণ: কোরবানি আল্লাহ্-এর প্রতি মুসলমানদের আত্মসমর্পণের প্রতীক।
- ধৈর্য ও ত্যাগ: হজরত ইবরাহিম (আ.) ও হজরত ইসমাঈল (আ.)-এর ধৈর্য ও ত্যাগ কোরবানির মূল শিক্ষা।
- দানশীলতা: কোরবানির মাংস অভাবীদের মধ্যে বিতরণ করা হয়।
- ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্য: কোরবানি মুসলমানদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ব ও ঐক্যের বন্ধন সুদৃঢ় করে।
- শুকরিয়া: আল্লাহ্-এর রহমত ও অনুগ্রহের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশের মাধ্যমে কোরবানি করা হয়।
কোরবানির মাধ্যমে মুসলমানরা আল্লাহ্-এর প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, তাঁর নির্দেশ পালন করে এবং তাঁর রাহে ধৈর্য ও ত্যাগ স্বীকার করে।
কোরবানির কিছু নিয়ম:
- কোরবানির পশু অবশ্যই সুস্থ, বয়স্ক এবং নির্দিষ্ট শর্তাবলী পূরণকারী হতে হবে।
- কোরবানির সময় নির্দিষ্ট দু’আ পড়তে হবে।
- কোরবানির মাংস অবশ্যই তিন ভাগে ভাগ করে – এক ভাগ নিজের জন্য, এক ভাগ আত্মীয়স্বজনের জন্য এবং এক ভাগ অভাবীদের জন্য।
ঈদুল আযহা মুসলমানদের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব। কোরবানি এই উৎসবের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ যা মুসলমানদের আল্লাহ্-এর প্রতি ভালোবাসা ও বিশ্বাসের প্রতিচ্ছবি।