চাকরিতে আস্থা হারানো শিক্ষিতদের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণ:বাংলাদেশে শিক্ষিতদের মধ্যে চাকরির প্রতি আস্থা হ্রাস পাওয়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। এর মধ্যে কয়েকটি উল্লেখযোগ্য কারণ হল:১) চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি:প্রতি বছর বিপুল সংখ্যক শিক্ষিত তরুণ কর্মজীবনে প্রবেশ করছে। এর বিপরীতে, নতুন চাকরির সুযোগ তৈরির হার অনেক কম। ফলে, চাকরির বাজারে প্রতিযোগিতা তীব্র হয়ে উঠেছে। অনেক যোগ্য শিক্ষিতরাও তাদের পছন্দের চাকরি পেতে ব্যর্থ হচ্ছে।২) বেতন ও কর্মপরিবেশের অসন্তোষ:অনেক চাকরির ক্ষেত্রে বেতন ও কর্মপরিবেশ আকর্ষণীয় নয়। বিশেষ করে বেসরকারি খাতে কর্মীদের শোষণের অভিযোগ প্রায়ই শোনা যায়। এর ফলে অনেকেই চাকরি করেও সন্তুষ্ট থাকতে পারছেন না।
৩) দক্ষতার অভাব:
শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রায়শই শিক্ষার্থীদের বাজার চাহিদা অনুযায়ী দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করা হয় না। ফলে, অনেকেই চাকরির বাজারে প্রবেশের পর প্রয়োজনীয় দক্ষতার অভাবে পিছিয়ে পড়ে।
৪) ঘুষ ও অনিয়ম:
বেসরকারি ও সরকারি উভয় খাতেই চাকরি পাওয়ার জন্য ঘুষ ও অনিয়মের প্রয়োজনীয়তা অনেক বেশি। যারা এই অনিয়মের সাথে জড়িত হতে চায় না তারা অনেক সময় চাকরি পেতে বঞ্চিত হয়।
৫) উদ্যোক্তা হওয়ার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি:
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অনেক শিক্ষিত তরুণ ঐতিহ্যবাহী চাকরির চেয়ে উদ্যোক্তা হওয়ার প্রতি বেশি আগ্রহী হচ্ছে। নিজস্ব ব্যবসা শুরু করার মাধ্যমে তারা আর্থিক স্বাধীনতা ও স্বপ্ন পূরণের সুযোগ পাচ্ছে বলে মনে করছে।
৬) বিদেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ:
বিশ্বায়নের ফলে অনেক শিক্ষিত তরুণ বিদেশে উন্নত বেতন ও কর্মপরিবেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাচ্ছে। এর ফলেও দেশে চাকরির বাজারে শিক্ষিতদের সংখ্যা কমে যাচ্ছে।
৭) রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্নীতি:
দেশের দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক অস্থিরতা ও দুর্নীতি অনেক শিক্ষিত তরুণকে হতাশ করে তুলছে। তারা মনে করছে এই পরিবেশে দেশে থেকে ভালো ভবিষ্যৎ গড়ে তোলা সম্ভব নয়।
সমাধান:
উল্লেখিত সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য সরকার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোকে একসাথে কাজ করতে হবে। নতুন চাকরির সুযোগ তৈরি, বেতন ও কর্মপরিবেশ উন্নত করা, শিক্ষা ব্যবস্থায় সংস্কার, ঘুষ ও অনিয়ম দূর করা, উদ্যোক্তাদের জন্য সহায়তা প্রদান ইত্যাদির ব্যবস্থা করতে হবে।