ভূমিকা:
বিদায় হজের ভাষণ ছিল ইসলামের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) দ্বারা প্রদত্ত একটি ঐতিহাসিক ভাষণ। এটি হিজরির ১০ম বছর, জিলহজ মাসের ৯ তারিখে আরাফাতের ময়দানে প্রায় ১ লাখ ৫০ হাজার সাহাবির সমাবেশে প্রদান করা হয়েছিল। এই ভাষণটি ইসলামের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মোড়।
ভাষণের বিষয়বস্তু:
নবী (সাঃ) এই ভাষণে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছিলেন, যার মধ্যে রয়েছে:
ঈশ্বরের একত্ববাদ:
- নবী (সাঃ) মুসলমানদেরকে ঈশ্বরের একত্ববাদে বিশ্বাস করার এবং তাঁর আদেশ মেনে চলার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “হে মানুষ! আল্লাহ এক, তাঁর কোন শরিক নেই।”
মানবজাতির ভ্রাতৃত্ব:
- নবী (সাঃ) ঘোষণা করেছিলেন যে, সকল মানুষ আদম ও হাওয়ার বংশধর এবং তাদের মধ্যে কোন বর্ণ, জাতি বা গোষ্ঠীর পার্থক্য নেই। তিনি বলেছিলেন, “হে মানুষ! আল্লাহ তোমাদেরকে একই পিতা (আদম) থেকে সৃষ্টি করেছেন এবং একই মা (হাওয়া) থেকে তোমাদের জন্ম দিয়েছেন। তোমাদের মধ্যে কোন বর্ণ, জাতি বা গোষ্ঠীর পার্থক্য নেই।”
নারীর অধিকার:
- নবী (সাঃ) স্ত্রীদের প্রতি সহনশীল ও শ্রদ্ধাশীল হওয়ার এবং তাদের অধিকার রক্ষা করার জন্য মুসলমানদের আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “স্ত্রীরা তোমাদের উপর আল্লাহর আমানত। তাদের প্রতি সদয় আচরণ করো।”
সুদের বিরুদ্ধে সতর্কতা:
- নবী (সাঃ) মুসলমানদেরকে সুদ থেকে বিরত থাকার এবং সুদ গ্রহণ ও প্রদান থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়েছিলেন। তিনি বলেছিলেন, “আজ থেকে সকল সুদ হারাম করা হলো।”
হজের গুরুত্ব:
- নবী (সাঃ) হজের গুরুত্ব এবং এর নিয়ম-কানুন সম্পর্কে মুসলমানদের শিক্ষা দিয়েছিলেন।
মানবজাতির ভবিষ্যৎ:
- নবী (সাঃ) মানবজাতির ভবিষ্যৎ সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন এবং মুসলমানদেরকে সৎ ও ন্যায়পরায়ণ জীবনযাপন করার আহ্বান জানিয়েছিলেন।
ভাষণের তাৎপর্য:
বিদায় হজের ভাষণ ইসলামের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি মুসলমানদের জীবনযাপনের জন্য একটি নীতিবোধ প্রদান করে এবং তাদেরকে ন্যায়বিচার, ন্যায়বিচার, সহনশীলতা এবং দয়াশীলতার মূল্যবোধ অনুসরণ করার আহ্বান জানায়।