পৃথিবীর প্রতিবেশী শুক্র গ্রহ একসময় অনেক পানি সমৃদ্ধ ছিল বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু আজকের শুক্র গ্রহ প্রায় সম্পূর্ণ শুষ্ক।
বিজ্ঞানীরা মনে করেন শুক্র গ্রহ পানিশূন্য হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে:
১) উচ্চ তাপমাত্রা: শুক্র সূর্যের খুব কাছে অবস্থিত, যার ফলে গ্রহটির তাপমাত্রা অত্যন্ত উচ্চ। পৃথিবীর তুলনায় শুক্র গ্রহের গড় তাপমাত্রা প্রায় 462°C (864°F)। এই তীব্র তাপ পানিকে বাষ্পে রূপান্তরিত করে এবং মহাকাশে উড়িয়ে দেয়।
২) গ্রহাণুবৃষ্টি: ধারণা করা হয় যে, শুক্র গ্রহের প্রাথমিক পর্যায়ে গ্রহাণুবৃষ্টি হয়েছিল। এই গ্রহাণুগুলো প্রচুর পরিমাণে পানি বহন করে এনেছিল। কিন্তু উচ্চ তাপমাত্রার কারণে সেই পানি বাষ্পে রূপান্তরিত হয়ে মহাকাশে উড়িয়ে গেছে।
৩) চৌম্বক ক্ষেত্রের অভাব: পৃথিবীর একটি শক্তিশালী চৌম্বক ক্ষেত্র রয়েছে যা সৌর বাতাস থেকে আসা চার্জযুক্ত কণা থেকে গ্রহকে রক্ষা করে। কিন্তু শুক্র গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্র অত্যন্ত দুর্বল। ফলে সৌর বাতাস পানির বাষ্প কণাগুলোকে মহাকাশে ধাক্কা দিয়ে বের করে দিতে পারে।
৪) ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপ: কিছু বিজ্ঞানী মনে করেন যে, শুক্র গ্রহের ভূতাত্ত্বিক কার্যকলাপ, যেমন আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত, পানিশূন্যতায় ভূমিকা রেখেছে। আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত প্রচুর পরিমাণে কার্বন ডাই অক্সাইড নির্গত করে, যা গ্রিনহাউস গ্যাস হিসেবে কাজ করে এবং তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে তোলে।
৫) সূর্য থেকে দূরত্ব বৃদ্ধি:কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে, পৃথিবীর সৃষ্টির সময় শুক্র সূর্যের আরও কাছে ছিল। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে শুক্র সূর্য থেকে দূরে সরে গেছে। এর ফলে গ্রহটি ঠান্ডা হয়েছে এবং পানি তরল অবস্থায় থাকার জন্য প্রয়োজনীয় তাপমাত্রা হারিয়েছে।
বিজ্ঞানীরা এখনও শুক্র গ্রহ পানিশূন্য হওয়ার প্রক্রিয়া সম্পূর্ণরূপে বুঝতে পারেননি। তবে উপরে উল্লেখিত কারণগুলো সম্ভবত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।